হাবিবুল বারি হাবিব : চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জের অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্র রবিউল আওয়াল । এলাকার ধোবড়া আনক উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার্থী সে । দুই ভাই-বোনের মধ্যে রবিউল ছোট । উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের পারদিলালপুর নরশিয়া গ্রামে জন্মের মাত্র ১ বছর পরই পিতাকে হারিয়েছে সে । শ্বাসকষ্ট ও ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তার পিতা মৃত আব্দুস সাত্তার । তারপর টানা ১ বছর এলাকায় ভিক্ষা করে ও এলাকাবাসীর সহযোগীতায় মুসলিমপুর মোড়ে ছোট্ট একটি মিষ্টির দোকান চালায় তার মা মোসা: বেলী বেগম (৪৩) । কিন্তু পাশে আরেকটি বড় দোকান থাকায় বেলি বেগমের দৈনিক আয় হয় মাত্র ১০০-১৫০ টাকা । আবার বেতন দিয়ে কাজের লোক রাখতে না পেরে অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলেকে নিয়েই দোকান চালান তিনি । অল্প এই আয় দিয়ে কোন রকমে দুবেলা খাবার জোগাড় করে পরিবারটি ।
কিন্তু বছরের শুরুতে ছেলে সপ্তম থেকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত হলেও বই কেনার সামর্থ্য হয়নি মায়ের । বছরের দুই মাস পার হলেও বই ছাড়াই স্কুলে যাচ্ছে রবিউল । প্রাইভেট-কোচিং তো দুরের কথা । আবার সামনে জেএসসি পরীক্ষার নিবন্ধন ও ফরম পূরণে কিছু টাকা লাগবে বলে হতাশায় ছেলেকে লিখাপড়া করানোর সাহসও হারিয়ে ফেলছেন মা । জানতে চাইলে রবিউল আওয়ালের মা বেলী বেগম পৃথিবী সংবাদকে বলেন, এক বছর বয়সী সন্তানকে রেখে আমার স্বামী মারা গেছে অনেক আগেই, তারপর অনেক কষ্ট করে শিশু বাচ্চা নিয়েই ছোট্ট দোকানটি থেকেই কোনরকমে চলি, মাঝে মধ্যে এলাকার চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সহযোগীতা নিয়ে সন্তানকে এপর্যন্ত লিখাপড়া করিয়েছি । কিন্তু এবছর বই কিনে দিতে পারিনি, সামনে নাকি জেএসসি পরীক্ষা দিতে একসাথে কিছু টাকা লাগবে তাই আমি এখন হতাশায় ভুগছি ।
স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রশিদ জানান, স্বামীহারা মহিলাটি আসলেই অসহায়, আমি প্রায়ই তার পরিবারকে সহযোগীতা করে থাকি । স্কুল পড়ুয়া ছেলেটির বই-খাতা কেনার সামর্থ্য তাদের আসলেই নেই ।